নাজাত: নেক কাজ দ্বারা নাকি কেবল আল্লাহ্‌র রহমত দ্বারা?

অনেক মুসলমান ভুল করে মনে করেন যে নাজাত মূলতঃ ভাল কাজ দিয়ে অর্জন করা যায়। কিন্তু কোরআন এবং সহীহ্‌ হাদীস কী বলে? দেখুন:

“হে ঈমানদারগণ, তোমরা শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করো না। যে কেউ শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করবে, তখন তো শয়তান নির্লজ্জতা ও মন্দ কাজেরই আদেশ করবে। যদি আল্লাহর অনুগ্রহ ও দয়া তোমাদের প্রতি না থাকত, তবে তোমাদের কেউ কখনও পবিত্র হতে পারতে না কিন্তু আল্লাহ যাকে ইচ্ছা পবিত্র করেন। আল্লাহ সবকিছু শোনেন, জানেন।”  (সূরা আন-নূর ২৪:২১)

  সহীহ্‌ হাদিস আরও পরিস্কার:

আবু হুরাইরা (রা) বলেন, আমি রসূলুল্লাহ (স)-কে বলতে শুনেছিঃ কোন ব্যক্তির নেক আমল কখনও তাকে জান্নাতে নিতে পারবে না। লোকেরা বললো, হে আল্লাহ্‌র রসূল!

ঈসা মসীহের কথা অনুযায়ী কি শরিয়ত দ্বারা নাজাত পাওয়া যায়?

ঈসার শিক্ষা অনুযায়ী কি
শরিয়ত দ্বারা নাজাত পাওয়া যায়?

ঈসা মসীহের অন্যান্য ভূমিকা এড়ানোর জন্য দুএকটি আয়াতের ভিত্তিতে (মথি ৫:১৭, মথি ১৯:১৬-৩০) বলা হয় যে তিনি শুধু শরিয়ত সমর্থন করতে আসলেন। এটাই তাদের অভ্যাস— দুএকটি আয়াত ভুল-ব্যাখ্যা করা এবং বাকি ৯৯ আয়াত অবহেলা করা। তাই আসুন, আমরা তৌরাত থেকে শুরু করে ভালভাবে দেখব কিতাবুল মোকাদ্দসে নাজাত এবং শরিয়তের সম্পর্ক বিশ্লেষণ করি:

তৌরাত শরীফে নাজাত

হযরত ঈসা যখন বার বার বললেন যে নাজাত শরিয়তের মাধ্যমে অর্জন করা যায় না বরং রহমতের মাধ্যমে আসে, এটা কোন নতুন শিক্ষা ছিল না বরং তৌরাত এবং নবীদের কিতাবের শিক্ষার সঙ্গে মিলে যায়। তৌরাত শরীফ থেকে বলা হয়েছে যে নাজাত আসবে একজন ‘মসীহ্’ এর মাধ্যমে। পয়দায়েশে বলা হয়েছে যে ইবরাহিম “মাবুদের কথার উপর ঈমান আনলেন আর মাবুদ সেইজন্য তাঁকে ধার্মিক বলে গ্রহণ করলেন।” (পয়দায়েশ ১৫:৬)—তার ঈমানের জন্য, প্রচেষ্টার জন্য নয়।

হযরত মূসার শরিয়তে, এমন কথা কোথাও বলা হয় নি যে ‘এই শরিয়ত পালন করলে বেহেশতে যাওয়া যাবে’:

বনি-ইসরাইলরা, তোমরা আমার কথা শোন এবং সতর্ক হয়ে এই সব মেনে চল, যাতে দুধ আর মধুতে ভরা সেই দেশে যাবার পরে তোমাদের পূর্বপুরুষদের মাবুদ আল্লাহ্‌র ওয়াদা অনুসারে তোমাদের উন্নতি হয় আর তোমরা সংখ্যায় অনেক বেড়ে উঠতে পার। (দ্বিতীয়বিবরণ ৬:৩)

বনি-ইসরাইলীয়দের জন্য মূসার শরয়িত পালনের পুরস্কার বেহেশত নয়, বরং প্যালেষ্টাইনে শান্তি ও সফলতা। আবার এই শরিয়তের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল পাপ সম্বন্ধে চেতনা, যেন আমরা বুঝতে পারি যে আল্লাহ্‌র ইচ্ছা কী কী এবং যে আমরা তা পুঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে পালন করচ্ছি না।

জবুর শরীফে নাজাত

প্রথমত, দাউদ নবীর জবুর শরীফে বলা হয় যে আল্লাহ্‌র সামনে সকল মানুষ গুনাহ্‌গার এবং নাজাত পাওয়ার অযোগ্য:

“আমার অন্যায়ের মধ্যে আমি ডুবে গেছি;

তা এমন বোঝার মত হয়েছে যা আমি বইতে পারি না।” (জবুর ৩৮:৪)

“তোমার এই সেবাকারীর বিচার কোরো না,

কারণ তোমার চোখে কোন প্রাণীই নির্দোষ নয়।”   (জবুর ১৪৩:২)

“তুমি আমার গুনাহের দিকে চেয়ে দেখো না;

আমার সমস্ত অন্যায় তুমি মাফ কর।” (জবুর ৫১:৯)

“আমার অন্তর নীরবে কেবল আল্লাহ্‌র অপেক্ষা করছে,

কারণ তিনিই আমার উদ্ধারকর্তা।

কেবল তিনিই আমার উঁচু পাহাড় আর আমার উদ্ধার;

তিনিই আমার কেল্লা আমি সম্পূর্ণভাবে পরাজিত হব না।” (জবুর ৬২:১,২)

“হে মাবুদ, তুমি যদি অন্যায়ের হিসাব রাখ,

তবে হে মালিক, কে দাঁড়িয়ে থাকতে পারবে?

বিজ্ঞান, কিতাব ও বিশ্বাস

আল্লাহ্‌র কালাম ও বিজ্ঞানের যথার্থ সম্পর্ক

সূচিপত্র:

প্রথম খণ্ড : বুকাইলিবাদের পরিচয়

বুকাইলিবাদ সম্পর্কে বিভিন্ন মুসলিম বুদ্ধিজীবীর ধারণা

বুকাইলিবাদের সমস্যাগুলি

বুকাইলিবাদের ইতিহাস

বেদ ও অন্যান্য ধর্মশাস্ত্রে “বৈজ্ঞানিক বিস্ময়”

কিছু “বৈজ্ঞানিক বিস্ময়’-এর বিশ্লেষণ

-বৈজ্ঞানিক বিস্ময় #১ : চাঁদের প্রতিফলিত আলো

-বৈজ্ঞানিক বিস্ময় # ২ : মাতৃগর্ভে ভ্রূণের পর্যায়সমূহ

-বৈজ্ঞানিক বিস্ময় # ৩ : পিপড়াদের মধ্যে যোগাযোগ

দ্বিতীয় খণ্ড : কিতাব ও বিজ্ঞানের সমন্বয়

সৃষ্টি ও বিজ্ঞান

তৌরাতে সৃষ্টির ধাপগুলো

সূর্যের পূর্বে উদ্ভিদজগত সৃষ্টি?