৩২৫ সালে রোমীয় শাসক কন্সটান্টিনের নিসিয়া কাউন্সিল
“৩২৫ সালে রোমীয় শাসক কন্সটান্টিন তার তৃত্ববাদ সমর্থন করার উদ্দেশ্যে ইঞ্জিলের অংশগুলো ঠিক করলেন”
৩২৫ সালের সে নিসিয়া কাউন্সিলে প্রায় ২০০ আগে থেকেই ইঞ্জিলের খণ্ড ঠিক করা হয়েছিল। নিসিয়া কাউন্সিলে বিভিন্ন এলাকার ঈসায়ী নেতারা একবাক্যে স্বীকার করেছে যা অনেক আগে থেকেই ঠিক করা ছিল।
জামাল বাদাওয়ীর মত টেলিভিশন প্রচারকগণ মনগড়া মিথ্যা গল্প ছড়িয়ে দিচ্ছে যে সেই কাউন্সিলে বিশপগণ শত শত বিকল্প গসপেলের মধ্যে চারটা পছন্দ করলেন। এই নিন্দাজক মনগড়া ইতিহাসের জন্য তারা কোন প্রমাণ দেয় না, রেফারেন্সও দেয় না। নিসিয়া কাউন্সিলের প্রত্যেক বিশপ শুধুমাত্র স্বীকৃত চারটি সুখবর (মথি, মার্ক, লূক, ইউহোন্না) মানতেন।
নিসিয়া কাউন্সিলের ১৫০ বছর আগে থেকে ইঞ্জিলের খণ্ডের একটি তালিকার পাণ্ডুলিপি পাওয়া গেছে যাকে বলা হয় ‘মুরাতরিয়ান ক্যানন’ (খ্রীষ্টাব্দ ১৭০ সাল থেকে), যেখানে ইঞ্জিলের খণ্ডগুলো পাওয়া যায়। পাণ্ডুলিপির উপর অংশ ছেঁড়া কিন্তু অবশ্য মথি এবং মার্কের উল্লেখ ছিল কারণ লূক তৃতীয় সুখবর হিসেবে দিয়েছে; তারপর ইউহোন্না, প্রেরিত, তারপর ‘পৌলের লেখায় জামাতের কাছে ৯টা চিঠি এবং ব্যক্তির কাছে ৪টা চিঠি (ফিলিমন, তীত, ১ ও ২ তীমথিয়), এহুদা, ইউহোন্নার দু’টা চিঠি, ইউহোন্না লিখিত প্রকাশিত কালাম, এবং পিতরের লেখা।’
ইঞ্জিলের মধ্যে কোন্ কোন্ খণ্ড থাকবে এই বিষয়ে ঈসায়ী জামাত নিজের মতামত নিয়ে কোন সিদ্ধান্ত নেননি, বরং এই তালিকাগুলো দিয়ে শুধু ঘোষণা করা হত যা যা আগে থেকেই কিতাব হিসেবে গ্রহণ করা ছিল। ঈসায়ী নেতা এরেনাউস (১১০খ্রীঃ) এবং জাস্টিন মার্টার (১৫০খ্রীঃ)-এর লেখাগুলো থেকে আমরা জানি যে প্রাচীন যুগেই এই চারটি সুখবরগুলো থেকে ঈসায়ী এবাদতে শিক্ষা দেওয়া হত। মসীহ্র পরে দ্বিতীয় শতাব্দীতে আগে এই রকম ইঞ্জিলের খণ্ডের তালিকা লেখার প্রয়োজন ছিল না, কারণ এই সময়ে (মসীহ্র ২০০ বছর পরে) কিছু মানুষ মিথ্যা সুখবর বা চিঠি লিখতে শুরু করল। তাই এদের মিত্যাচার প্রকাশ করার জন্যই ইঞ্জিলের সহীহ্ অংশের তালিকা দেওয়ার প্রয়োজন হল।
এমনকি, ইঞ্জিল শরীফের মধ্যেও হযরত পিতর হযরত পৌলের লেখাকে বলে “কিতাব” (গ্রীক γραφή গ্রাফেয়, অর্থাৎ নাজিলকৃত ধর্মগ্রন্থ) এবং ১ তীমথিয় ৫:১৮ আয়াতে হযরত পৌল হুবহু লূকের সমাচারের উদ্ধৃতি দিয়ে (লূক ১০:৭) সেটাকে “পাক-কিতাব” বলে। তাই আমরা দেখা যে ইঞ্জিলের মধ্যেও সেটাকে পাক-কিতাব বলা হয়।
১৮০ খ্রীষ্টাব্দে ঈসায়ী নেতা এরেনেউস এই চারটি সুখবর (মথি, মার্ক, লূক, ইউহোন্না) সম্বন্ধে বলেছেন—
সুখবরগুলোর সংখ্যা যে চারের বেশী অথবা চারের কম হবে তা সম্ভব নয়, কারণ যেহেতু আমাদের এই দুনিয়ার চার দিক আছে, এবং চারটি প্রধান বায়ু, যখন ঈসায়ী জামাত দুনিয়ার বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে আছে, এবং জামাতের ভিত্তি এবং স্তম্ভ হল সেই ইঞ্জিল এবং জীবন্ত রূহ্; সেহেতু তা যুক্তিসঙ্গত হয় যে এর চারটা স্তম্ভ থাকবে, চারদিকে নতুন জীবন দিয়ে শ্বাসত হচ্ছে অনন্ত জীবন…কারণ জীবন্ত প্রাণী হল চতুর্পদ, এবং সুখবরও তেমনই চতুর্গুণ।
এই ইরিনেওস ছিলেন সাহাবী ইউহোন্নার “রূহানিক নাতি”, কারণ তিনি ঈসার প্রিয় উম্মত এবং ইউহোন্না-সমাচারের লেখক হযরত ইউহোন্নার শিষ্য পলিকার্পের শিষ্য ছিলেন।
৩২৫ সালের নাইসিয়া কাউন্সিলের আসল উদ্দেশ্য
নাইসিয়ার প্রধান উদ্দেশ্য আসলে কিতাবের খণ্ড সমর্থন করা নয় বরং ‘আরিয়ান বিতর্ক’ সমাধান করার জন্যই বসা হল। মূলত, আরিউস নামক একজন নেতা শিক্ষা দিচ্ছিল যে ঈসা মসীহ্ আক্ষরিক অর্থে আল্লাহ্র পুত্র, অর্থাৎ সৃষ্টির আগে কোন এক সময়ে আল্লাহ্র পুত্র হল (নাউজুবিল্লাহ)। আরিউস বলত:
“যদি পিতা থেকে আগত একজাতের পুত্র হয়, তাহলে তার একটা শুরু ছিল”
“আল্লাহ্ ঈসাকে তার একটি সন্তান হিসাবে তাকে জন্মালেন।”
কিন্তু নিসিয়ার ৯৯% নেতারা তার এই শিক্ষা অগ্রাহ্য করলেন, কারণ সেটা ইঞ্জিল বিপরীত এবং খারাপ; ‘আল্লাহ্র পুত্র’ কথাটির সঠিক অর্থ আক্ষরিক না বরং রূপক।
তবুও, আরিউস এবং অন্যান্য নেতারা হুবহু একই ইঞ্জিল শরীফ মানত, এবং একই নাজাতের শিক্ষা (যে নাজাত কাজ দ্বারা অর্জন করা যায় না বরং একমাত্র মসীহের উপর ঈমান আনার মাধ্যমে আল্লাহ্র রহমত পাওয়া যায়)। কিতাবের খণ্ড নিয়ে এবং ইঞ্জিলের মূল শিক্ষা নিয়ে নিসিয়া কাউন্সিলে কোন দ্বিমত ছিল না। আরিউস পরে তার মন পরিবর্তন করল।
কিছু মুসলমান প্রচারক থেকে শোনা যায় যে সম্রাট কন্সটান্টিন খুব জোর করে বিশপদের অনিচ্ছায় আরিউসকে অগ্রাহ্য করার জন্য চাপ দিলেন। আসলে, আরিউসের মন পরিবর্তন করার পরে, তাকে চার্চে আবার ঢুকানোর জন্য সম্রাট কন্সটান্টিন বিশপ আথানাসিউসকে বিশেষভাবে অনুরোধ করলেন কিন্তু তিনি রাজি হননি। এইজন্য সম্রাট কন্সটান্টিন বিশপ আথানাসিউসকে নির্বাচনে পাঠিয়ে দিলেন। মূল কথা বিশপদের তুলনায়, আরিউসের প্রতি কন্সটান্টিনের বেশি দয়া ছিল।
১.
…
‘গসপেল অব বার্নাবাস’ কি প্রকৃত ইঞ্জিল ছিল না?
বাংলাদেশে ইদানিং কিছু কট্টরপন্থী টেলিভিশন প্রচারক দাবি করছে যে “গসপেল অব বার্নাবাস” নামক একটি রচনা হচ্ছে আসল ইঞ্জিল, যেটা খ্রিষ্টান চার্চ ইচ্ছাকৃতভাবে জনগণের কাছ থেকে শত শত বছর ধরে লুকিয়ে রেখেছে। তবে বিশেষজ্ঞরা একমত যে এই তথাকথিত ‘গসপেল’ রচিত হয়েছে মধ্যযুগেই, অর্থাৎ মসীহের দেড় হাজার বছর পরে। সেটা স্পেনে লেখা হয়েছে নাকি ইতালীতে লেখা হয়েছে, শুধু এই নিয়ে বিশেষজ্ঞদের কোন দ্বিমত রয়েছে। একজন বিশিষ্ট মুসলিম লেখক ও ইসলামি চিন্তাবিদ এইভাবে লিখেছেন:
As regards the “Gospel of Barnabas” itself, there is no question that it is a medieval forgery … It contains anachronisms which can date only from the Middle Ages and not before, and shows a garbled comprehension of Islamic doctrines, calling the Prophet the “Messiah”, which Islam does not claim for him.
…
“ইঞ্জিলের খণ্ড ছাড়াও বেশ কিছু প্রাচীন ‘গসপেল’ ছিল ”
“ইঞ্জিলের খণ্ড ছাড়াও বেশ কিছু প্রাচীন ‘গসপেল’ ছিল যেগুলো নিউ টেস্টামেন্টে স্থান পায়নি কারণ সেগুলোতে ঈসা মসীহ্র সম্পর্কে অন্যরকম শিক্ষা দেয়—যেমন গসপেল অব থোমাস, এবিয়োনাইট গসপেল, গসপেল অব হিব্রুজ্, ও কপ্টিক গসপেল অব ডি ইজিপ্শান্স।”
ঠিক, এমন কিছু “গসপেল” রয়েছে যেগুলো মথি, মার্ক, লূক ও ইউহোন্নার অনেক অনেক পরে রচনা হয়েছে এবং যেগুলো প্রথম জামাত অগ্রাহ্য করেছেন। কিন্তু সেই প্রথম জামাত যে কারণে সেগুলো অগ্রাহ্য করেছেন, সেই একই কারণে প্রত্যেক মুসলমানেরও সেগুলো অগ্রাহ্য করা উচিত—
১। এই সব গ্রন্থগুলো লিখেছেন ‘নস্টিসিজ্ম’ (Gnosticism) নামক একটি ধর্মমতের সদস্যরা, যেটা মসীহ্র প্রথম সাহাবীরা অস্বীকার করেছেন। এই নস্টিসিজ্ম ধর্মমত মসীহ্র আগেও ছিল এবং আসলে একটি পৃথক ধর্মমত ছিল, যদিও এরা মসীহ্কে এদের নিজস্ব একজন শিক্ষক বানাতে চেষ্টা করেছেন। এই নস্টিসিজ্ম মতবাদের মূল শিক্ষা হচ্ছে যে ঈশ্বর দুনিয়া সৃষ্টি করেননি, কিন্তু একজন ত্রুটিযুক্ত মন্দ স্রষ্টা পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন। নস্টিসিষ্টেরা Dualist ছিল, এরা বিশ্বাস করতেন যে প্রাকৃতিক সবকিছুই মন্দ এবং আত্মা-ই ভাল। এইজন্য এরা শিক্ষা দিতেন যে ঈসা মসীহ্র আসলে দেহ-মাংসের কোন শরীর ছিল না; তার কোন দেহ ছিল না, যার কারণে অনেকে চিন্তা করতেন যে মসীহ্র পক্ষে শারীরিকভাবে মারা যাওয়া অসম্ভব। এরা নিরামিষ ছিল এবং ‘ইবাদতে এদের বিভিন্ন জঘন্য যৌন রীতি ছিল। আবার এদের Acts of Paul, Gospel of Thomas, ও Gospel of the Egyptians অনুযায়ী যৌন মিলন সবক্ষেত্রেই নিষেধ, বিয়ের পরেও। এরা বিশ্বাস করতেন যে নাজাতের উপায় ঈমান ও ধার্মিক জীবনের মাধ্যমে আসে না বরং কিছু হিন্দুদের মত এরা বিশ্বাস করতেন যে সেটা গোপন জ্ঞানের মাধ্যমে আসে। ঈসা মসীহ্র অনুসারীদের তাদের পথে আনার জন্য এরা মাঝে মাঝে ঈসার সম্বন্ধে নতুন মনগড়া জীবনী রচনা করতেন। উদাহরণস্বরূপ, Gospel of Judas অনুযায়ী, ঈসা মসীহ্ আসলে প্রতারক এহুদা ইস্কারিয়তকে তাকে ধরিয়ে দিতে বললেন যেন তার শারীরিক দেহ থেকে তার আত্মা মুক্তি পেতে পারে। এইরকম ধারণা ব্যাপকভাবে পাওয়া যায় Gospel of Thomas, Gospel of Mary, Gospel of Judas, ও Coptic Gospel of the Egyptians-এ।
এর একটি ব্যতিক্রম হচ্ছে Gospel of the Hebrews, কারণ সেটি নস্টিক ছিল না—সেটি ছিল মথি সমাচারের অনেক পরের একটি ব্যাখা—যেমন প্রভুর মোনাজাতে “দৈনন্দিন রুটি”র বদলে আছে “আগামিকালের রুটি”। সাধারনত এমন ব্যাখ্যা থেকে বোঝা যায় যে সেটা মূল নয় বরং পরের একটি ব্যখ্যা, কারণ সাধারণত সবচেয়ে কঠিন ব্যাখ্যা মূল গ্রন্থে থাকে। ৪র্থ শতাব্দীর বাইবেল বিশেষজ্ঞ জেরোম্ এই লেখা নিয়ে অনেক লিখেছেন, এবং তিনি সেটাকে মনে করতেন শুধু মথি সমাচারের একটি হিব্রু অনুবাদ। জেরোম অনুযায়ী, মথি সুখবর থেকে সেটার মাত্র অল্প পার্থক্য ছিল, এবং এর মধ্যে একটি পার্থক্য হচ্ছে যে সেটায় পাক-রূহ্কে ঈসার মা বলা হয় (নাউজুবিল্লাহ!)।…
ইঞ্জিলের নির্ভরযোগ্যার পক্ষে পাণ্ডুলিপির প্রমাণ
১. পাণ্ডুলিপির প্রমাণ
অন্যান্য সকল গ্রীক বা ল্যাটিন লেখার চেয়ে অনেক অনেক বেশী পুরানো পাণ্ডুলিপি রয়েছে কিতাবুল মোকাদ্দসের। তার জন্যে আরও অনেক বেশী সংখ্যক পাণ্ডুলিপি রয়েছে এবং আরও অনেক বেশী পুরানো পাণ্ডুলিপি রয়েছে। অন্যান্য ক্ল্যাসিকাল লেখকদের পাণ্ডুলিপির তুলনায়, ইঞ্জিল শরীফের জন্যে ১,০০০ গুণ বেশী পাণ্ডুলিপি রয়েছে। অর্থাৎ, আমরা যদি ইঞ্জিল শরীফের নির্ভরযোগ্যতা অস্বীকার করি, তাহলে প্রাচীন সভ্যতার অন্যান্য প্রত্যেকটি দলিল আরও বেশী করে অস্বীকার করতে হবে। মূল গ্রীক ইঞ্জিলের জন্য ৫,৭০০ এর বেশী পাণ্ডুলিপি বর্তমান রয়েছে।
বিভিন্ন প্রাচীন লেখার জন্যে পাণ্ডুলিপির প্রমাণের তুলনা
রচনা লেখার কত বছর পরে প্রথম পাণ্ডুলিপি
প্লেটো |
১,৩০০ বছর |
৭ |
হোমারের ‘ইলিয়াদ’ |
৪০০ বছর |
৬৪৩ |
সিজারের ‘গ্যালিক যুদ্ধ’ |
১,০০০ বছর |
১০ |
লিবীর ‘রোমের ইতিহাস’ |
৪০০ বছর |
২৭ |
তাকিতুসের ‘পঞ্জিকা’ |
১,০০০ বছর |
২০ |
থুকিডাইডেসের ‘ইতিহাস’ |
১,৩০০ বছর |
৮ |
হিরোডোটাসের ইতিহাস |
১,৩৫০ বছর |
৮ |
ইঞ্জিল শরীফ |
৫০ বছর |
৫,৭০০(মূল ভাষায়) |
৫,৭০০ হচ্ছে শুধু মূল গ্রীক ভাষায় পাণ্ডুলিপির সংখ্যা—প্রাচীন সিরিয়, মিশরীয়, ল্যাটিন, আর্মেনীয়, জর্জিয় এবং গথিক ভাষায় প্রাচীন অনুবাদে ২০,০০০ থেকে ২৫,০০০ পাণ্ডুলিপি আছে। ইঞ্জিলের জন্য হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর শত শত বছর আগে থেকে তিনটি প্রধান পাণ্ডুলিপি রয়েছে—
কোডেক্স আলেকজান্ড্রিকাস
– লণ্ডনে ব্রিটিশ যাদুঘরে অবস্থিত এই পাণ্ডুলিপি মসীহ্র পর পঞ্চম শতাব্দীতে লেখা হয়েছে। দু’এক পাতা ছাড়া এই পাণ্ডুলিপিতে পুরো কিতাবুল মোকাদ্দস রয়েছে।
কোডেক্স সিনাইতিকুস – ব্রিটিশ যাদুঘরে অবস্থিত এই পুরো ইঞ্জিল শরীফের পাণ্ডুলিপি লেখা হয়েছে চতুর্থ শতাব্দীর শেষের দিকে।
কোডেক্স ভ্যাটিকানুস – রোমের ভ্যাটিকান গ্রন্থাগারে অবস্থিত এই চতুর্থ-শতাব্দীর পাণ্ডুলিপিতে পুরো ইঞ্জিল শরীফ আছে।
এগুলো দু’টি আলাদা text-type (অর্থাৎ এক মূল লিপি থেকে প্রতিলিপির গোষ্ঠী) থেকে এসেছে, কিন্তু তবুও সেগুলো সঙ্গতিপূর্ণ।
এই পূর্ণ পাণ্ডুলিপিগুলো ছাড়া, ইঞ্জিল শরীফের অনেক পাণ্ডুলিপির অংশ রয়েছে মূল লেখার ৪০-৬০ বছর পর থেকে। যেমন ধরুন, ১৩৫ খ্রীষ্টাব্দের p52 প্যাপিরাসে ইঞ্জিল শরীফের ইউহোন্না ১৮ অধ্যায়ের একটি অংশ আছে। নীল নদের ধারে আবিষ্কৃত এই পাণ্ডুলিপি দিয়ে প্রমাণ হয় যে ইউহোন্না সুখবর খুব তাড়াতাড়ি লেখার স্থান (ইফিষ শহর) থেকে অনেক দূরে ছড়িয়ে গেল। যেখানে ক্ল্যাসিকাল লেখকদের জন্য প্রথম ৫০০ থেকে কোন পাণ্ডুলিপি নেই, ইঞ্জিল শরীফের সমাপ্তির পরে প্রথম ১০০ বছর থেকে ১০-১৫ পাণ্ডুলিপি আছে এবং প্রথম ৩০০ বছর থেকে ৯৯ পাণ্ডুলিপি রয়েছে।
২.
…