কোরআনে বাইবেলের কথা বলা আছে কি?

“কোরআনে বাইবেলের কথা বলা হয় নি,
বরং শুধু তৌরাত, জবুর এবং ইঞ্জিলের কথা বলা হয়েছে”

আসলে, ইংরেজী ‘বাইবেল’ শব্দ গ্রীক βιβλία ‘বিব্‌লিয়া’’ শব্দ থেকে এসেছে, যার অর্থ “গ্রন্থগুলো” বা ল্যাটিন ভাষায় “গ্রন্থটি”। আরবী ভাষায় তা হয় الْكِتَاب (“আল-কিতাব”) অথবা الكتاب المقدس (“আল-কিতাবুল মোকাদ্দাস”), এবং হযরত মুহাম্মদের (সাঃ)-এর শত বছর আগে ও পরে বাইবেল সবসময়ই এই নামে পরিচিত। তাই যখন কোরআন শরীফে এই একই শব্দ الْكِتَاب ইহুদী-খ্রীষ্টানদের ধর্মগ্রন্থ সম্বন্ধে ব্যবহার করা হয়েছে তখন কোন প্রশ্নই নাই যে সেখানে একই গ্রন্থ বোঝানো হচ্ছে—

ইয়াহূদীরা বলে, ‘খৃষ্টানদের কোন ভিত্তি নাই’ এবং খৃষ্টানরা বলে, ‘ইয়াহূদীদের কোন ভিত্তি নাই; অথচ তাহারা আল-কিতাব (الْكِتَاب) পাঠ করে। (সূরা বাকারা ২:১১৩)

“তোমরা (ইহুদীগণ) আল-কিতাব (الْكِتَاب) শিক্ষা দান কর” (সূরা আলে-‘ইমরান ৩:৭৯)

আরবী ভাষায় বাইবেলকে আরও স্পষ্টভাবে বোঝানো সম্ভব না। কোরআন শরীফে যদি অন্য কোন কিছু বোঝানো হত তাহলে অবশ্য তা পরিষ্কারভাবে বলা হত।


অন্যান্য সম্পর্কিত প্রবন্ধ:

“চারটা আলাদা গসপেল রয়েছে কেন?”

“চারটা আলাদা গসপেল রয়েছে কেন?”

value=”http://www.youtube.com/v/ugBH9KK_qWo&hl=id_ID&fs=1?version=3&autohide=1&rel=0″ > type=”application/x-shockwave-flash”wmode=”transparent”allowscriptaccess=”always”width=”100%”>

আল্লাহ্‌তা’লা আমাদের কাছে অন্ধবিশ্বাস চান না, তিনি যথেষ্ট প্রমাণ সহকারে তার সত্য অবতীর্ণ করেন যেন সংশয়ীদের কাছেও সেটা অনস্বীকার্য হয়। চারজন আলাদা আলাদা সাক্ষীদের সাক্ষ্যতে হযরত ঈসার সমস্ত দাবী, অলৌকিক কাজ, মৃত্যু এবং পুনরুত্থান অস্বীকার করতে চারগুণ কঠিন হয়। দু’একজন সাক্ষীর সাক্ষ্য হয়ত সন্দেহ বা প্রশ্ন করা যায়, কিন্তু চারটি সাক্ষ্য সন্দেহ করা কঠিন।

তৌরাত শরীফের শরিয়ত বনি-ইসরাইলের জন্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ নিয়ম রেখে গেছে—

“মাত্র একজন সাক্ষী দাঁড়ালে চলবে না; দুই বা তিনজন সাক্ষীর কথা ছাড়া কোন বিষয় সত্যি বলে প্রমাণিত হতে পারবে না।” (দ্বিতীয় বিবরণ ১৯:১৫)

তৌরাতের এই নিয়ম অনুযায়ী বনি-ইসরাইলের কাছে হযরত ঈসার বাণী প্রমাণ করার জন্য একাধিক সাক্ষীর সাক্ষ্যর প্রয়োজন ছিল।

তারপরেও, ইঞ্জিল এবং কোরআন থেকে আমরা জানি যে হযরত ঈসা ছিলেন নিজেই আল্লাহ্‌র জীবন্ত কালাম, এবং তাই ইঞ্জিলের মূল ভূমিকা হচ্ছে সেই জীবন্ত কালামের জীবন এবং শিক্ষা সম্বন্ধে সাক্ষ্য হওয়া। অর্থাৎ হযরত ঈসার ক্ষেত্রে নবীই প্রধান, কিতাব অপ্রধান।

চারটি সুখবর থাকার আরেকটি কারণ হচ্ছে যে, আলাদা আলাদা সাক্ষীর দৃষ্টিকোণ থেকে আমরা হযরত ঈসার জীবন ও শিক্ষা সম্বন্ধে আরও বেশী শিক্ষালাভ করতে পারি, যেহেতু প্রত্যেক দলিলে ঈসার কাজের বিশেষ একটি দিকের উপর জোর দেওয়া হয়।

১৮০ খ্রীষ্টাব্দে, ঈসায়ী নেতা এরেনেউস এই চারটি সুখবর (মথি,মার্ক,লূক,ইউহোন্না) সম্বন্ধে বলেছেন—

সুখবরগুলোর সংখ্যা যে চারের বেশী অথবা চারের কম হবে তা সম্ভব নয়, কারণ যেহেতু আমাদের এই দুনিয়ার চার দিক আছে, এবং চারটি প্রধান বায়ু, যখন ঈসায়ী জামাত দুনিয়ার বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে আছে, এবং জামাতের ভিত্তি এবং স্তম্ভ হল সেই ইঞ্জিল এবং জীবন্ত রূহ্‌; সেহেতু তা যুক্তিসঙ্গত হয় যে এর স্তম্ভও চারটি থাকবে, চারদিকে নিঃশ্বসিত হচ্ছে অনন্ত জীবন…কারণ জীবন্ত প্রাণী হল চতুর্পদ, এবং সুখবরও তেমনই চতুর্গুণ।

এই ইরিনেওস ছিলেন সাহাবী ইউহোন্নার “রূহানি নাতি”, কারণ তিনি ঈসার প্রিয় উম্মত এবং ইউহোন্না-সমাচারের লেখক হযরত ইউহোন্নার শিষ্য পলিকার্পের শিষ্য ছিলেন।


অন্যান্য সম্পর্কিত প্রবন্ধ:

ঈসার কাছে একটি ইঞ্জিল, নাকি তার অনুসারীদের কাছে চারটি ইঞ্জিল?

“কোরআন শরীফে হযরত ঈসার কাছে নাজিলকৃত একটি ইঞ্জিলের কথা বলা হয়, কিন্তু বর্তমান ইঞ্জিল লিখেছেন তার সাহাবীরা”

এই অভিযোগের মধ্যে চারটি প্রশ্ন আছে:

কোরআন শরীফে যেমন বলা হয়, ঈসা মসীহ্‌ সত্যই “ইঞ্জিল” (অর্থাৎ সুসংবাদের বাণী) পেয়েছিলেন, কিন্তু সেটা ঈসার জীবনকালে একটি বই ছিল না বরং একটি বাণী বা শিক্ষা। সেই শিক্ষা “ইঞ্জিল” কিতাবের মধ্যে পাওয়া যায়।

হযরত ঈসা এবং হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) উভয়ই নিজে কোন কিতাব লিখে রাখেননি, যদিও বর্তমান কাল অনেকে এমনভাবে কথা বলে থাকেন। তাদের মৃত্যুর পরে সাহাবীগণ তাদের কিতাব লিখে রেখেছেন।

হযরত ঈসার ইঞ্জিল শরীফ একটু ভিন্নভাবে নাজিল হয়েছে। অধিকাংশ নবীদের ক্ষেত্রে, যেমন হযরত ইশাইয়া (আঃ) এবং হযরত ইয়ারমিয়া (আঃ), আল্লাহ্‌ তাদের কাছে একটি বিশেষ বাণী নাজিল করেছেন “আল্লাহ্‌র কালাম” হিসাবে, এবং তাই সেই নবীর কিতাব হল সেই লিখিত আল্লাহ্‌র বিশেষ বাণী।

কিন্তু ইঞ্জিল কোরআন উভয় গ্রন্থে যেমন বলা হয়েছে, হযরত ঈসা হচ্ছেন নিজেই একক “আল্লাহ্‌র বাণী,” অর্থাৎ তিনি নিজেই ছিলেন প্রধান বাণী।

অন্যান্য নবীরা লিখিত বাণী (“আল্লাহ্‌র কালাম”) নিয়ে আসলেন, কিন্তু হযরত ঈসার ক্ষেত্রে বিষয়টি সম্পূর্ণ বিপরীত ছিল। তিনি নিজেই আল্লাহ্‌র জীবন্ত বাণী ছিলেন, এবং এইজন্য তার কিতাব (ইঞ্জিল) অপ্রধান, বরং হযরত ঈসাই প্রধান বাণী। ইঞ্জিল কিতাব হচ্ছে সেই জীবন্ত আল্লাহ্‌র বাণীর জীবন ও শিক্ষা সম্পর্কে পাক-রূহের পরিচালনায় লিখিত সাক্ষীদের পবিত্র লিখিত বর্ণনা। হযরত ঈসা নিজেই তার সাহাবীদের এমন দায়িত্ব দিয়ে গেলেন, যেন তারা দুনিয়ার কাছে তার জীবন ও সমস্ত শিক্ষা সম্পর্কে সাক্ষ্য দেয় (ইঞ্জিল, মথি ২৮:১৮-২০)। তিনি আবার প্রতিজ্ঞা করলেন যে পাক রূহ্‌ নিজেই তার শিক্ষা সম্বন্ধে সাহাবীদের মনে করিয়ে দেবেন (ইউহোন্না ১৪:২৬)। আল্লাহ্‌র জীবন্ত কালাম সম্পর্কে এই পবিত্র বাণী সংরক্ষণ করার উদ্দেশ্যে, মসীহ্‌র বারজন উম্মত এবং তাদের সঙ্গীরা পাক-রূহের পরিচালনায় মসীহ্‌র জীবন-চরিত এবং শিক্ষা লিখে রাখলেন ইঞ্জিল কিতাব হিসাবে।

ইঞ্জিলের শব্দার্থ

তাহলে “ইঞ্জিল” সম্পর্কে আমরা কোরআনে কী ধারণা পাই?…

আগেকার কিতাব সম্পর্কে কোরআনের শীর্ষ তাফসীরবিদদের ধারণা

জাকির নায়েকের মত সমালোচকদের মূল সমস্যা হল এরা কোরআনের শীর্ষ ব্যাখ্যাকারীদের বিপরীতে কথা বলছেন, যারা ইহুদী-খ্রীষ্টান ধর্মগ্রন্থের নির্ভরযোগ্যতা স্বীকার করতেন। প্রসিদ্ধ মুসলমান অধ্যাপক সৈয়দ আব্দুল্লাহ্‌ তার The Charge of Distortion of Jewish and Christian Scriptures (“ইহুদী ও খ্রীষ্টান ধর্মগ্রন্থ বিকৃত করার অভিযোগ”) প্রবন্ধে এটা বিস্তারিতভাবে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন,

“যেহেতু ইহুদী ও খ্রীষ্টানদের অনুমোদিত ধর্মগ্রন্থগুলো বর্তমান পর্যন্ত অনেকটা আগের মত রয়েছে, তাই একথ বলা কঠিন যে তৌরাত ও ইঞ্জিল সম্পর্কে কোরআনের সাক্ষ্য শুধুমাত্র মূসা ও ঈসার আমলের আগেকার “খাঁটি” তৌরাত ও ইঞ্জিলের কথা বলছেন। যদি এই কিতাবগুলোর পাঠ মোটামুটি আগেকার সপ্তম শতাব্দীর পাঠের মত থেকে থাকে, তাহলে ইঞ্জিল ও তৌরাতের প্রতি কোরআন শরীফে যে পরিমাণ শ্রদ্ধা দেওয়া হয় তা এ যুগেও দেওয়া উচিত। কোরআনের অনেক তাফসীরকারীগণ, আল-তাবারী থেকে রাজি থেকে ইব্ন-তায়মিয়্য়া এমনকি কুতব্‌ এই মতামত পোষণ করেন। ইহুদী ও খ্রীষ্টানদের কিতাবের প্রতি আধুনিক যুগে অনেক মুসলমানের যে পুরোপুরি গ্রাহ্য না করার মনোভাব আছে তা কোরআন ও তফসিরের প্রধান ব্যক্তিত্বের মধ্যে কোন সমর্থন পায় না”

হযরত ‘আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাঃ)

হযরত ‘আব্দুল্লাহ্‌ ইবনে আব্বাস বলেছেন,

“তাহ্‌রিফ (বিকৃত করা) শব্দটি দিয়ে বোঝানো হচ্ছে একটি জিনিস তার মূল প্রকৃতি থেকে সরিয়ে দেওয়া; এবং যেহেতু আল্লাহ্‌র কাছে নাজিলকৃত একটিমাত্র শব্দও বিকৃত করা কোন মানুষের পক্ষে সম্ভব নয়, সেহেতু ইহুদী-খ্রীষ্টানরা কেবলমাত্র আল্লাহ্‌র বাণীর অর্থের ভুলব্যাখ্যা করতে সক্ষম হয়েছিল।

অন্য একটি গ্রন্থে, হযরত ইবনে আব্বাসের একই কথা পাওয়া যায়—

“এরা কালাম বিকৃত করেন” কথার মানে হচ্ছে “এরা তার অর্থ পরিবর্তন বা বিকৃত করেন”। কারণ আল্লাহ্‌র কোন কিতাবের একটিও শব্দ পরিবর্তন করা কারো পক্ষে সম্ভব নয়– এর অর্থ হচ্ছে যে এরা কালামের ভুল ব্যাখ্যা করেন।

হযরত ইবনে কাসীর ‘ইবনে আব্বাসের এই একই কথা উল্লেখ করেন-

“আল্লাহ্‌র কিতাবের বিষয়ে, সেগুলো এখনও সংরক্ষিত এবং পরিবর্তন করা সম্ভব নয়।”

এই হল হযরত ‘আব্দুল্লাহ্‌ ইবনে আব্বাসের তাফসীর, যিনি ছিলেন হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)-এর আপন চাচাত ভাই এবং সাহাবীদের একজন। একজন সাহাবী হিসেবে তার মতামত অন্যান্য তাফসীরকারীদের চেয়ে বেশী গ্রহনযোগ্য।

ইমাম আত-তাবারী (রাঃ) (৮৩৮-৯২৩ খ্রীষ্টাব্দ)

বিখ্যাত তাফসীরবিদ আত-তাবারী খুব পরিষ্কারভাবে প্রকাশ করেছেন যে তার মতে, ইহুদী-খ্রীষ্টানদের কাছে আল্লাহ্‌র প্রেরিত মূল কিতাবগুলো তখনও ছিল—

“সর্বপ্রথমটা ছিল তৌরাত, যেটা আহলে-কিতাবদের হাতে রয়েছে…তারপর ইঞ্জিল শরীফ, যেটা খ্রীষ্টানদের হাতে রয়েছে ।”

তাবারীর মূল অভিযোগ ছিল যে এরা শুধু সেগুলোর প্রকৃত অর্থ বোঝেন নি। যদিও তিনি বাগদাদে ইহুদী-খ্রীষ্টানদের বিরুদ্ধে লেখালেখি করতেন, তিনি কিন্তু কখনও তাদের কিতাব পরিবর্তন করার অভিযোগ করেন নি।

ইমাম ফকরুদ্দিন আল-রাজী (রাঃ) (মৃঃ ১২১০ খ্রীষ্টাব্দ)

বিখ্যাত তাফসীরবিদ আল-রাজীও সমর্থন করেন যে ইহুদীদের প্রতি ‘তাহ্‌রিফ’ অভিযোগ দিয়ে বোঝানো হচ্ছে কীভাবে ইহুদীরা নবীজীর কথাগুলো বিকৃত করতেন।

সূরা বাকারা ৭৫ আয়াতের তাফসীরে আল-রাজী ‘তাহরিফ’ সম্পর্কে ব্যাখ্যা দেন যে “শব্দের পরিবর্তন” (التَّحْرِيف اللَفْظي আল-তাহ্‌রিফ আল-লাফজী ) হচ্ছে—

“অসম্ভব যদি আল্লাহ্‌র বাণী কোরআনের মত করে বহু লোকের সামনে প্রকাশিত হয়ে থাকে”

ইঞ্জিল শরীফ সম্পর্কে আমরা এই জানি যে, সেটা শুরু থেকেই বহু লোকের কাছে প্রকাশিত হল। ইমাম আল-রাজী আবার বলেন—

“এমন কোন কথা নেই যে এরা কোন শব্দ (তিল্কা-আল-লাফ্‌জা) কিতাব থেকে সরিয়ে দিয়েছেন”

ইমাম ইবনে তায়মিয়া (রাঃ)

ইমাম ইবনে তায়মিয়া (রাঃ) বলেন—

আবার, এই লোকদের মধ্যে (মুসলমানদের মধ্যে) এমন আছে যারা দাবী করেন যে তৌরাত ও ইঞ্জিলের মধ্যে অনেককিছু বাতিল, আল্লাহ্‌র কালাম নয়। কেউ কেউ বলেন বাতিল অংশই কম। আবার বলা হয় যে “কেউ লিখিত কিতাবের কোন কিছু পরিবর্তন করেন নি, বরং এরা (ইহুদী-খ্রীষ্টানগণ) এর অর্থ বিকৃত করেছেন ভুলব্যাখ্যার মাধ্যমে। এই উভয় মতামতের কিছু কিছু মুসলমানরা গ্রহণ করেছে। এদের মধ্যে তৃতীয়টি হচ্ছে সঠিক মতামত; সেগুলো হল পৃথিবীতে সেগুলোর সহীহ্‌ কপি রয়েছে, এবং সেগুলো হযরত মুহাম্মদ(সা) এর আমল পর্যন্ত রয়ে গেল, এবং বিকৃত কপিও অনেক আছে। যারা দাবী করেন যে এই কপির মধ্যে কোন কিছুই বিকৃত হয়নি তারা অসম্ভব কথা দাবী করছেন। যারা বলেন যে হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর পরে সব কপিগুলো বিকৃত করা হয়েছে, তারা প্রকাশ্য মিথ্যা বলছেন। কোরআন তো তাদেরকে বিচার করতে বলে তৌরাত ও ইঞ্জিলের মধ্যে আল্লাহ্‌ যা নাজিল করেছেন সেটা দিয়ে। আল্লাহ্‌ তাদের বলেন যে উভয় কিতাবের মধ্যে আছে হিকমত। এরা যে সকল কপি বিকৃত করেছেন তার পক্ষে কোরআনের কোন বক্তব্য নেই।”

ইমাম ইবনে তায়মিয়ার মতামত নিয়ে মেলবোর্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের মুসলিম অধ্যাপক সৈয়দ আব্দুল্লাহ্‌ মন্তব্য করেন—

এই দুই ধর্মীয় ধারার ইতিহাস থেকে আমরা জানি যে নবীজী (সাঃ) এর প্রচার কাল পর্যন্ত (খ্রীষ্টাব্দ সপ্তম শতাব্দীর শুরুতে) ইহুদী খ্রীষ্টান উভয় সম্প্রদায়ের কিতাবের জন্য বহু পাণ্ডুলিপির প্রমাণ রয়েছে। সেই সময়ে এদের কাছে যে কিতাব ছিল, তা বর্তমানেও একই। ইঞ্জিলের ক্ষেত্রেও তাই। যেহেতু কোরআন শরীফ এই দুই কিতাবের কথা বলে, সেই কথা বর্তমান যুগেও সমানভাবে কার্যকর। তায়মিয়ার মতামত নিয়ে এটাই প্রধান সমস্যা।১০

তা ছাড়া অন্যান্য অনেক শীর্ষ মুসলমান চিন্তাবিদ, যেমন ইমাম আল-গাজালী (রাঃ), ইমাম শাহ্‌ ওয়ালি উল্লাহ্‌ (রাঃ) এই নিয়ে একমত ছিলেন। শুধু ইবনে কাজেম (মৃঃ ১০৬৪খ্রীঃ) এর যুগ থেকেই অনেক মুসলমানরা এই অভিযোগ শুরু করলেন যে ইহুদী-খ্রীষ্টানরা তাদের কিতাব পুরোপুরি বিকৃত করে দিয়েছেন, অর্থাৎ লিখিত পরিবর্তন। এই ছিল হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর অনেক পরে, এবং ‘ইবনে আব্বাস (রা)-এর মত সাহাবীদের মতামতের বিপরীতে।


অন্যান্য সম্পর্কিত প্রবন্ধ:

কোরআনে কি আগেকার কিতাব হেফাজত করে?

“আগের কিতাবসমূহ বিকৃত হওয়ার কারণে কোরআন পাঠানো হয়েছে।”

value=”http://www.youtube.com/v/8Zv-Z3Cc5wQ&hl=id_ID&fs=1?version=3&autohide=1&rel=0″ > type=”application/x-shockwave-flash”wmode=”transparent”allowscriptaccess=”always”width=”100%”>

জাকির নায়েকের মত মৌলবাদীরা কোরআন-বহির্ভূত ধারণা প্রচার করেছে যে, আগের আমলের কিতাবসমূহের পরিবর্তনের কারণেই কোরআন নাজিল করা হয়েছে। কোরআনে কিন্তু এরকম ধারণা কোথাও পাওয়া যায় না। বরং এর বিপরীতেই কোরআন আসলে বলে যে, আগের কিতাবসমূহ সমর্থন করার ( সাদ্দাক্বা ) জন্যই কোরআন দেওয়া হয়েছে:

“ইহার পূর্বে ছিল মূসার কিতাব আদর্শ ও অনুগ্রহস্বরূপ। আর এই কিতাব ইহার সমর্থক, আরবি ভাষায় যেন ইহা জালিমদিগকে সতর্ক করে এবং যাহারা সৎকর্ম করে তাহাদিগকে সুসংবাদ দেয়।” (আল আহকাফ ৫:১২)

কোরআন “আরবী” ভাষায় নাজিল হয়েছিল যাতে আরবের লোকেরা সেই সময় পর্যন্ত তাদের কাছে যেসব খোদায়ী বাণী অজ্ঞাত ছিল, সেসব সম্বন্ধে জ্ঞানলাভ করতে পারে। অভিধান অনুসারে ‘সমর্থন করা” অর্থ ‘অনুমোদন দেওয়া’ বা ‘কার্যকারিতা সম্বন্ধে নতুনভাবে নিশ্চয়তা দেওয়া।’

যারা বলেন কোরআন আগের কিতাবসমূহ প্রতিস্থাপন করে তারা নিচের আয়াতটি ব্যবহার করে:

“আমি তোমার প্রতি সত্যসহ কিতাব অবতীর্ণ করিয়াছি ইহার পূর্বে অবতীর্ণ কিতাবের সমর্থক ও সংরক্ষকরূপে।” (৫:৪৮)

তাদের মতানুসারে, কোরআন হচ্ছে এক সংরক্ষক ( মুহাইয়িম ) এই অর্থে যে কিতাবসমূহকে কোন বিকৃতিসাধন থেকে তার মূল ও সঠিক বিষয় সংরক্ষণ করে। কিন্তু বিখ্যাত মুসলিম অনুবাদক ইউসুফ আলির মতানুসারে, এই আয়াতে মুহাইয়িম (সংরক্ষক) অর্থ হচ্ছে “যিনি রক্ষা করেন, দেখাশোনা করেন, সমর্থক হিসাবে সাক্ষ্য দান করেন, আগলে রাখেন, এবং উপস্থাপন করেন বা তুলে ধরেন।”

তৌরাতের প্রতি ঈসার মনোভাবের ক্ষেত্রে সেই একই ‘সমর্থন করা’ ( সাদ্দাক্বা ) শব্দটি কোরআনও ব্যবহার করা হয় (৫:৪৬)। ঈসা এমন শিক্ষা দেননি যে, তৌরাতকে অস্বীকার করতে হবে অথবা এর শিক্ষা বিকৃত হয়ে গেছে। বরং তিনি শিক্ষা দেন যে, এটা অপরিবর্তনীয়, পবিত্র বাক্য যা পাঠ করা এবং বোঝা উচিত:

“এই কথা মনে কোরো না, আমি তৌরাত কিতাব আর নবীদের কিতাব বাতিল করতে এসেছি। আমি সেগুলো বাতিল করতে আসি নি বরং পূর্ণ করতে এসেছি। আমি তোমাদের সত্যিই বলছি, আসমান ও জমীন শেষ না হওয়া পর্যন্ত, যতদিন না তৌরাত কিতাবের সমস্ত কথা সফল হয় ততদিন সেই তৌরাতের এক বিন্দু কি এক মাত্রা মুছে যাবে না।” (মথি ৫:১৭-১৮)

কোরআনও আগের কিতাবসমূহ সম্বন্ধে এই একই কথা বলে।


অন্যান্য সম্পর্কিত প্রবন্ধ:

সূরা বাকারা ২:৯৭ আয়াতে ‘কিতাব পরিবর্তন’

“সূরা বাকারা ২:৯৭ আয়াতে স্পষ্টভাবে আছে যে ইহুদী ও খ্রীষ্টানরা তাদের কিতাব পরিবর্তন করেছেন”

কোরআনে একটিমাত্র আয়াত আছে (২:৭৯), যাতে মনে হয় কিতাবীয় বিকৃতির কথা বলা হচ্ছে এবং যেটা পুর্ববর্তী-কিতাব বিরোধী সমালোচকদের মুখে প্রায়ই শোনা যায়:

“যখন তাহাদের [ইহুদীদের] একদল (فَرِيق ফারীক ) আল্লাহর বাণী [কোরআন] শ্রবণ করে অতঃপর তাহারা উহা বিকৃত করে, অথচ তাহারা জানে। … তাহাদের মধ্যে এমন কতক নিরক্ষর লোক আছে যাহাদের মিথ্যা আশা ব্যতীত কিতাব সম্বন্ধে কোন জ্ঞান নাই, তাহারা শুধূ অমূলক ধারণা পোষণ করে। সুতরাং দুর্ভোগ তাহাদের জন্য যাহারা নিজ হাতে কিতাব রচনা করে এবং তুচ্ছ মূল্য প্রাপ্তির জন্য বলে ,‘ইহা আল্লাহ্‌র নিকট হইতে’। তাহাদের হাত যাহা রচনা করিয়াছে তাহার জন্য শাস্তি তাহাদের এবং যাহা তাহারা উপার্জন করিয়াছে তার জন্য শাস্তি তাহাদের। (সূরা বাকারা ২:৭৫,৭৮-৭৯)

৭৫ আয়াত থেকে আমরা বুঝি যে, আলোচ্য “কিতাব”টি হচ্ছে কোরআন (আগের আমলের কিতাবগুলি নয়) যা ইহুদীরা বিকৃত করেছে। এই অনুচ্ছেদে মদিনার ইহুদীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হচ্ছে যে এরা নিজের স্বার্থে হযরত মুহাম্মদ(সাঃ)-এর কথা বিকৃত করতেন।

৭৮-৭৯ আয়াতে বলা হচ্ছে যে, ইহুদীদের মধ্যে অবস্থিত কিছু “নিরক্ষর” লোক নিজ হাতে গ্রন্থ লেখে সেটাকে আসমানী কিতাব হিসেবে তুচ্ছ মূল্যে বিক্রি করতেন। প্রথমেই একটি সরাসরি বিরোধ দেখা দিচ্ছে, যেহেতু নিরক্ষর অর্থই হচ্ছে লিখতে অসমর্থ!…

কোরআন অনুযায়ী কি খ্রীষ্টানদের কিতাব পরিবর্তন হয়েছিল?

“কোরআন বলে যে ইহুদী ও খ্রীষ্টানদের কিতাব পরিবর্তন করা হয়েছে”

value=”http://www.youtube.com/v/Geu_Qq-N2iQ&hl=id_ID&fs=1?version=3&autohide=1&rel=0″ > type=”application/x-shockwave-flash”wmode=”transparent”allowscriptaccess=”always”width=”100%”>

বেশ কয়েক জায়গায় কোরআন শরীফে ইহুদীদের (খ্রীষ্টানদেরকে নয়) সমালোচনা করা হয়েছে যে তারা কিতাব থেকে উদ্ধৃতি দেওয়ার সময় শব্দ বিকৃত করে (حُيَرِّفُونَهُ -২:৭৫), গোপন করে (৬:৬১, ২:১৪০), পড়ার সময় তাদের জিহ্বা দ্বারা বিকৃত করে (يَلْؤنَ السِنَتَهُم -৩:৭৮) এবং এমনকি তেলাওয়াত করার সময়ে এরা শব্দগুলি সঠিক স্থান থেকে পরিবর্তন করে বলে (حُيَرِّفُونَ الكَلِمَ عَنْ مَوَاضِعِهِ – ৫:১২-১৪)। উদাহরণস্বরূপ:

আর নিশ্চয় তাহাদের মধ্যে একদল লোক আছেই যাহারা কিতাবকে জিহ্বা দ্বারা বিকৃত করে যাহাতে তোমরা উহাকে আল্লাহ্‌র কিতাবের অংশ মনে কর, কিন্তু উহা কিতাবের অংশ নহে, এবং তাহারা বলে,‘উহা আল্লাহ্‌র পক্ষ হইতে’ ; কিন্তু উহা আল্লাহ্‌র পক্ষ হইতে নহে। (আলে-‘ইমরান ৩:৭৮)

কোরআন কিন্তু একবারের জন্যও বলে না যে, কিতাবের লিখিত কোন অংশ পরিবর্তন করা হয়েছে, বা আসল কিতাবগুলি আজকের কিতাবগুলি থেকে ভিন্ন। এর বদলে, ইহুদী ও খ্রীষ্টান কিতাবগুলি সম্বন্ধে কোরআনে অনেক ভাল কথা বলা হয়েছে:

“ইঞ্জিল অনুসারীগণ যেন আল্লাহ্‌ উহাতে যাহা অবতীর্ণ করিয়াছেন তদনুসারে বিধান দেয়। আল্লাহ্‌ যাহা অবতীর্ণ করিয়াছেন তদনুসারে যাহারা বিধান দেয় না , তাহারাই ফাসিক।” (সূরা মায়িদা ৫:৪৭)

“বল, হে কিতাবধারীগণ!…

তওরাত ও ইঞ্জিল কি হারিয়ে গেছে?

“মুহাম্মদের আগেই তৌরাত ও ইঞ্জিল হারিয়ে গেছে”


কোরআন শরীফ স্পষ্টভাবে বলে যে, মুহাম্মদের সময়ে (৬১০-৬৩২ খ্রীষ্টাব্দ) আসল তৌরাত ইহুদীদের কাছে ছিল, আক্ষরিকভাবে তাদের হস্তের মধ্যে (بَيْنَ يَدَيْهِ, বাইন ইয়াদাইহি) (সূরা আলে-‘ইমরান ৩ আয়াত)। সূরা আল-আ’রাফে বলা হয়েছে যে, তৌরাত ও ইঞ্জিল “ তাদের কাছে আছে ” (৭:১৫৭)।

ইঞ্জিল অনুসারীগণ যেন আল্লাহ্‌ উহাতে যাহা অবতীর্ণ করিয়াছেন তদনুসারে বিধান দেয়। আল্লাহ্‌ যাহা অবতীর্ণ করিয়াছেন তদনুসারে যাহারা বিধান দেয় না , তাহারাই ফাসিক। (সূরা মায়িদা ৫:৪৭)

কোরআনে যাদেরকে ইঞ্জিল অনুসারী বলা হয়েছে তাদের কাছে যদি ইঞ্জিল না থাকতো তবে তারা কিভাবে ইঞ্জিল দ্বারা বিচার করতে পারতো?…

“ঈসা মসীহ্‌কে কেন ‘আল্লাহ্‌র পুত্র’ বলা হয়?”

“ঈসা মসীহ্‌কে কেন ‘আল্লাহ্‌র পুত্র’ বলা হয়?”

value=”http://www.youtube.com/v/LZV5IqsMWUE?version=3&autohide=1&rel=0″> type=”application/x-shockwave-flash”wmode=”transparent”allowscriptaccess=”always”width=”100%”>

উদাহরণস্বরূপ কোন এক সময়ে ইসলামের অনুসারীদের এক অংশের মধ্যে বিশ্বাস বিদ্যমান ছিল যে, আল্লাহ্‌তা’আলার দেহ বা হাত পা ছিল। তারা বিশ্বাস করত, আল্লাহ্‌ ছিল হাত, মুখ ইত্যাদি দৈহিক অঙ্গপ্রতঙ্গ ধারণকারী। কোরআন ও হাদিসের অংশ বিশেষের আক্ষরিক বর্ণনার ফলে, এই বিশ্বাসকে প্রমাণ করে তুলেছেন। যেমন ইসলামী দর্শনে লেখা আছে

“এদের (যাহারিয়া ও মুশাব্বিহা) মতে, আল্লাহ্‌ শরীরী, আপন আসনে আসীন। তাঁর হাত মুখ আছে। তিনি রসুল করীমের পবিত্র স্কন্ধে হাত রাখেন এবং রসুল করীমও তার হাতের স্নিগ্ধতা অনুভব করেন।”

পরবর্তীতে অবশ্যই ইসলামী চিন্তাবিদ ও পণ্ডিতরা উপলব্ধি করেছিলেন যে, আক্ষরিক দৃষ্টিকোণে ঐ সব অংশের ব্যাখ্যা দেয়া বা গ্রহণ করা যাবে না। ঐ সব অংশকে সব সময় অলংকারিক রূপক অর্থে গণ্য করতে হবে।

রূপক ব্যাখ্যা

এক সময়ে এটা বুঝতে পারা গেল যে, ধর্মগ্রন্থের কোন কোন অংশকে রূপকভাব অবশ্যই গণ্য করতে হবে। এর পরে কীভাবে অন্যান্য কঠিন অংশগুলোকে ব্যাখ্যা করতে হবে, তা পরিষ্কার হয়ে গিয়েছিল। যেমন নিম্নলিখিত হাদিসগুলো আক্ষরিক অর্থে বুঝতে খুবই কষ্টকর ছিল। রসুল করিম বলেছিলেন:

“কালো পাথর (হাজরে আসওয়াদ) হলো আল্লাহ্‌র হাত।”

“মুসলমানের অন্তর আল্লাহ্‌র আঙ্গুলসমূহের মধ্যে অবস্থিত।”

“আমি ইয়ামেন থেকে আল্লাহ্‌র খোশবু পাচ্ছি”

এখানে অপ্রত্যক্ষ এবং রূপক ব্যাখ্যা গ্রহণ করায় সমস্ত অসুবিধাগুলো দূরীভূত হয়েছে এবং প্রকৃত অর্থ স্পষ্টরূপে ভেসে উঠেছে।

আগেকার ভুল বুঝাবুঝি

উক্ত প্রকৃতির ধর্মীয় ভুল বুঝাবুঝি শুধুমাত্র কোরআন এবং হাদিসের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। তৌরাত, জবুর এবং ইঞ্জিলের মধ্যেও এমন বহু ব্যাখ্যার জটিলতা আছে। যেমন, নবিদের উপাধিগুলো নিয়ে সহজেই ভুল বুঝাবুঝি সৃষ্টি করা সম্ভব।

ইবরাহিম খলিলুল্লাহ্‌

উদাহরণস্বরূপ আমরা হযরত ইবরাহিম (আঃ) সম্বন্ধে একটু চিন্তা করতে পারি। তাঁকে উপাধিটা দেয়া হয়েছিল ‘খলিলুল্লাহ্‌’ বা ‘আল্লাহ্‌র দোস্ত’। এখানে যারা আক্ষরিক অর্থ উপাধিটা বুঝতে চায়, তাদের অনেক জটিলতা ও সমস্যা রয়েছে। কারণ মানুষের দোস্ত থাকতে পারে, কিন্তু আল্লাহ্‌র দোস্ত থাকা কেমন করে সম্ভব?…

“আল্লাহ্‌র কালামের জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত ভাষা আরবী”

“আল্লাহ্‌র কালামের জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত ভাষা আরবী”

অনেকে মনে করেন যে আল্লাহ্‌র কালাম হল অনন্ত দিন আগে থেকে বেহেশতে সংরক্ষিত আল্লাহ্‌র মুখে উচ্চারিত কথা। এই ভিত্তিতে অনেকে তাবিজ-কবচ, মন্ত্রপাঠ এবং পানি-পড়ার মাধ্যমে কোরআন শরীফের আয়াত ব্যবহার করে। কিন্তু এই ধারণা আসলে ভুল – অন্যান্য ভাষার মত আরবী ভাষাও একটি আঞ্চলিক অস্থায়ী এবং বিবর্তিত ভাষা, কিন্তু আল্লাহ্‌ অসীম, সর্বজনীন এবং চিরন্তন। আরবী ভাষার বিভিন্ন হরফ সঠিকভাবে উচ্চারণ করার জন্য দাঁত লাগে, কণ্ঠ লাগে, জিভ লাগে। আল্লাহ্‌র কি দাঁত, কণ্ঠ, জিভ আছে?…