“আল্লাহ্র কালামের জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত ভাষা আরবী”
“আল্লাহ্র কালামের জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত ভাষা আরবী”
অনেকে মনে করেন যে আল্লাহ্র কালাম হল অনন্ত দিন আগে থেকে বেহেশতে সংরক্ষিত আল্লাহ্র মুখে উচ্চারিত কথা। এই ভিত্তিতে অনেকে তাবিজ-কবচ, মন্ত্রপাঠ এবং পানি-পড়ার মাধ্যমে কোরআন শরীফের আয়াত ব্যবহার করে। কিন্তু এই ধারণা আসলে ভুল – অন্যান্য ভাষার মত আরবী ভাষাও একটি আঞ্চলিক অস্থায়ী এবং বিবর্তিত ভাষা, কিন্তু আল্লাহ্ অসীম, সর্বজনীন এবং চিরন্তন। আরবী ভাষার বিভিন্ন হরফ সঠিকভাবে উচ্চারণ করার জন্য দাঁত লাগে, কণ্ঠ লাগে, জিভ লাগে। আল্লাহ্র কি দাঁত, কণ্ঠ, জিভ আছে? নাউজুবিল্লাহ্। আল্লাহ্তা’আলা তো মানুষের মত সীমিত না যে তিনি তার চিন্তা মানুষের ভাষায় প্রকাশ করে। আল্লাহ্ অবশ্য মানুষের ভাষায় তার কালাম পাঠায়, কিন্তু সবগুলো হচ্ছে বস্তুত একটি অনুবাদ; আল্লাহ্ জাগতিক সমস্তকিছুর ঊর্ধ্বে এবং বাইরে, তিনি আরবী বা অন্য কোন ভাষায় কথা বলেন না। আমাদের কাছে কুকুর বা পাখিদের ভাষা যত অমার্জিত এবং সীমিত, আল্লাহ্র কাছে মানুষদের ভাষাও তেমন অমার্জিত এবং সীমিত। উদাহরণস্বরূপ, একজন প্রাইমেটবিদ্যা গবেষক হয়ত গবেষণার জন্য গরিলাদের ঘোঁৎ ঘোঁৎ ভাষা শিখতে পারবে, কিন্তু তার কারণে তো বলা যায় না যে তার মাতৃভাষা গরিলাদের ঘোঁৎ ঘোঁৎ ভাষা, সেটা অপমানসূচক। কোরআন শরীফে তো বলা হয় যে সেটা আরবীতে নাজিল হয়েছে শুধুমাত্র যেন এলাকাবাসীরা বুঝতে পারে (সূরা ১২:২)।
ভাষা বিশেষজ্ঞরা বলেন যে সকল ভাষাই চিন্তা প্রকাশ এবং যোগাযোগ করার জন্য সমানভাবে সক্ষম। ৩০০ বছর আগে এই ভুল । ঐশ্বরিক ভাষা’ ধারণার কারণে মনে করা হত যে বাংলা ভাষা একটি দূর্বল সীমিত ভাষা এবং বাংলা চর্চার বদলে শিক্ষিত সমাজ শুধু আরবী, ফরাসি এবং সংস্কৃত ভাষা ব্যবহার করত। যদি বেহেশতে শুধু আরবীতে কথা চলে, তাহলে মুনকার নকীরের সওয়াল জওয়াব হযরত মূসা এবং হযরত ঈসা কিভাবে দিবে, কারণ এরা তো আরবী ব্যবহার করত না।
কোনো প্রশ্ন বা মন্তব্য থাকলে আমরা শুনতে চাই! নিচের ফর্ম দিয়ে যোগাযোগ করুন:
Leave a Reply